বিশ্বকে ক্ষুধামুক্ত করে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো প্রতিবছর ১৬ অক্টোবর তারিখে “বিশ^ খাদ্য দিবস” আন্তরিকতা ও গুরুত্বের সাথে পালন করে। এবারের প্রতিপাদ্য “কর্ম গড়ে ভবিষ্যৎ, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব ”(Our actions are our future. A#zero hunger world by 2030 is possible) । অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের অন্যান্য সেক্টরের তুলনায় কৃষি সেক্টর এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এসডিজি ((SDG)’সহ ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ অর্জনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে এবং মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী’র, নিরলস প্রচেষ্টায় দেশ ইতোমধ্যেই দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এর পাশাপাশি, বাংলাদেশ বিশ্বে ধান উৎপাদনের চতুর্থ, সবজি উৎপাদনে তৃতীয় ও ফল উৎপাদনে হার বিবেচনায় সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন দেশের সর্ববৃহৎ কৃষি সম্প্রসারণ সেবা প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে দেশের কৃষির উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি ২০০টিরও বেশি ফসলের উৎপাদন, দলভিত্তিক সম্প্রসারণ সেবা প্রদান, সেচ ব্যবস্থাপনা, বীজ ব্যবস্থাপনা, ফসল সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, মানসম্পন্ন কৃষি উপকরণ সহজলভ্যকরণ ও বিপণন প্রযুক্তির সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন দুর্যোগে কৃষকের পাশে থেকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং গ্রামীণ আর্থসামাজিক উন্নয়নে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। প্রতিবছর কৃষি আবাদী জমি কমে গেলেও আধুনিক ও লাগসই কৃষি প্রযুক্তিসমূহের কার্যকরী সম্প্রসারণের কারণে আমাদের দানাদার খাদ্যশস্যের উৎপাদন এখন ৪ কোটি মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে এবং যা ক্রমান্বয়ে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭১ সালে দেশের মোট দানাদার ফসল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। অথচ, বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে সর্বমোট ৪১৩.২৫ লক্ষ মেট্রিক টন দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয় এবং যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৩২৮.৯৫ লক্ষ মেট্রিক টন। শুধু খাদ্যশস্যই নয়, অন্যান্য শস্য উৎপাদনের পরিমাণও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উৎপাদিত আলুর পরিমাণ ছিল ১০৩.১৭ লক্ষ মেট্রিক টন, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল মাত্র ৫২.৬৮ লক্ষ মেট্রিক টন। এছাড়া বর্তমানে দেশের ফসল আবাদের নিবিড়তা বৃদ্ধি পেয়ে ২১৫% হয়েছে, যা ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ১৭৯%।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS